আপনার স্বাস্থ্য সম্মত, উপযোগী ভোজ্য তেল আপনিই বেছে নিন

শরমিতা লায়লা প্রমিঃ প্রায় তিন দশকের বেশি সময় ধরে ভোজ্য তেল প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণের সাথে জড়িত থাকার সুবাদে প্রায়ই বন্ধু-বান্ধব ও পরিচিতজনের এই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় যে, কোন ভোজ্য তেলটি আমাদের জন্য উপযোগী?
সাম্প্রতিক কালে প্রচার মাধ্যমগুলোতে স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য/ফিচারের ব্যাপক প্রচারণার ফলে সাধারণ ভোক্তাগণও বর্তমানে স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠছেন। স্বাস্থ্য রক্ষায় বিভিন্ন খাদ্যের ভূমিকা সম্পর্কেও তাঁরা আগের চাইতে অনেক সচেতন। খাদ্য প্রস্তুতিতে ভোজ্য তেল একটা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তাই ভোক্তাগণ ভোজ্য তেল সম্পর্কে জানতে অধিক আগ্রহী। পত্র পত্রিকায় ভোজ্য তেল নিয়ে মাঝে মাঝে লেখাও প্রকাশিত হচ্ছে। কিন্তু সে সব লেখায় অনেক সময় সাম্প্রতিক বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য ব্যবহার না করে পুরনো তথ্যের ভিত্তিতে সেকেলে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। আবার কোন কোন চিকিৎসক সাধারণ ভোক্তাদের বিষয় বিবেচনা না করে শুধু উচ্চ বিত্তদের অথবা অসুস্থ বিশেষ করে হৃদরোগীদের খাদ্যাভাসের ভিত্তিতে ভোজ্য তেল সম্পর্কে ঢালাও মন্তব্য করেন যার ফলে ভোক্তারা বিভ্রান্ত হয়ে যান এবং ভোজ্য তেল সম্পর্কে তাঁদের মধ্যে একটা ভীতি বিরাজ করে। এ কারণে দেখা যায় যে সাধারণ ভোক্তারা প্রায়ই বিক্রেতাদেরকেও জিজ্ঞাসা করেন যে এই তেল কোলেস্টেরল মুক্ত কি না। দোকানীরাও বিজ্ঞভাবে
উত্তর দেন যে এই তেল কোলেস্টেরল ফ্রি। বাস্তবতা হল যে কোন ভোজ্য তেলই কোলেস্টেরল মুক্ত নয়। তবে উদ্ভিদজাত ভোজ্য তেলসমূহে কোলেস্টেলের পরিমাণ ৫০ পি.পি.এম. ((Parts Per Million─প্রতি দশ লক্ষ ভাগের এক ভাগ) এর কম থাকায় এই তেলসমূহকে কোলেস্টেরল মুক্ত আখ্যায়িত করা হয়, কারণ মানব দেহের জন্য প্রত্যহ ঐ পরিমাণ কোলেস্টেরল প্রয়োজন। এ সকল ভোক্তাদের জ্ঞাতার্থে আমার এই লেখার প্রয়াস যাতে তাঁরা নিজেদের তথা পরিবারের জন্য উপযোগী ভোজ্য তেলটি বেছে নিতে পারেন।
বর্তমানে সমগ্র বিশ্বে ১৭টি ভোজ্য তেল ও চর্বি ‘ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাজেশন’ (WHO) ও ফুড এ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন (FAO) কর্তৃক অনুমোদিত। তার মধ্যে তিনটি ভোজ্য তেল অর্থাৎ সরিষা, পাম ও সয়াবিন এর মধ্যে আমাদের আলোচনা সীমাবদ্ধ রাখা হবে। কারণ আমাদের দেশে এই তিনটি তেলই প্রধান ভোজ্য তেল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আলোচনার প্রথমেই বলে নেওয়া দরকার যে, খাদ্যাভাস ও দৈহিক শ্রমের উপর নির্ভর করবে আপনার তথা আপনার পরিবারের জন্য সবচেয়ে উপযোগী ভোজ্য তেল কোনটি হবে। একজন শহুরে চাকুরীজীবি বা ব্যবসায়ী এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের দৈহিক শ্রম ও খাদ্যাভ্যাস এবং শহরে বসবাসকারী একজন শ্রমিক পরিবার বা গ্রামে বসবাসকারী একটি চাষী পরিবারের দৈহিক শ্রম ও খাদ্যাভ্যাস একরকম হতে পারে না। তাই তাদের উপযোগী ভোজ্য তেলের ধরণ এবং পরিমাণও এক হতে পারে না।
ভোজ্য তেল ও চর্বি একই ধরণের পদার্থ। স্বাভাবিক তাপমাত্রায় যে তেল তরল অবস্থায় থাকে তাকে তেল বলে, আর যে তেল অর্ধ-জমাট বা জমাট অবস্থায় থাকে চর্বি বলে। তেল/চর্বি সম্পৃক্ত, একক-অসম্পৃক্ত ও বহু-অসম্পৃক্ত অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিডের সমন্বয়ে গঠিত। তেলে সম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিডের পরিমাণ বেশি হলে তেলের গলনাংক বেশি হয় অর্থাৎ স্বাভাবিক তাপমাত্রায় উক্ত তেল অর্ধ-জমাট বা জমাট অবস্থায় থাকে যেমন ঘি, মাখন, বনস্পতি, বাটার অয়েল, মার্জারিন ইত্যাদি। অপরদিকে একক ও বহু-অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিডের পরিমাণ বেশি হলে তেল তরল অবস্থায় থাকে, যেমন সয়াবিন, পাম তেল, সূর্যমুখী, সরিষার তেল প্রভৃতি। বর্ণিত তিন ধরণের ফ্যাটি এসিডেরই মানবদেহে প্রয়োজন আছে।
তেল/চর্বি আমরা দু’ভাবে গ্রহণ করি। একটা হল খাদ্য তৈরিতে সরাসরি গ্রহণকৃত ভোজ্য তেল/চর্বি অর্থাৎ রন্ধন তেল,ঘি, বাটার অয়েল, মাখন, পনির, মার্জারিন ইত্যাদি এবং অপরটি হল বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যে প্রাকৃতিকভাবে বিদ্যমান তেল/চর্বি যেমন, মাছ, মাংস, ডিম, দুধ ইত্যাদি থেকে প্রাপ্ত তেল/চর্বি।
যেসব ব্যাক্তি/পরিবার প্রতিদিনই সকালের নাস্তায় ডিম, দুধ, মাখন এবং দুপুর ও রাতের খাবারে মাছ, মাংস গ্রহণ করেন তাঁরা এসব খাদ্যের মাধ্যমে সম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড পেয়ে যাচ্ছেন। তাদের জন্য একক অসম্পৃক্ত ও বহু-অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড সম্পন্ন ভোজ্য তেল হবে আদর্শ। আবার যেসব ব্যক্তি/পরিবার মাঝে মধ্যে ডিম, দুধ, মাখন, মাছ, মাংস খান তাঁদের জন্য সম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ ভোজ্য তেল/চর্বি উপযোগী হবে। নিম্নে বাংলাদেশে ব্যবহৃত ৩টি প্রধান ভোজ্য তেল সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হল।
সরিষার তেল: বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী জনপ্রিয় তেল হল সরিষার তেল। কিন্তু তুলনামূলকভাবে দাম বেশি হওয়াতে এ তেল এখন নিম্ম আয়ের লোকজনদের নাগালের বাইরে। সরিষার তেল একটা উৎকৃষ্ট ভোজ্য তেল, বিশেষ করে বাংলাদেশীদেরজন্য। এ তেলে সম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিডের পরিমাণ ৬-১০%, একক-অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিডের পরিমাণ ৬৫-৭২% এবং বহু-অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিডের পরিমাণ ২০-২৬%। একক-অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিডের পরিমাণ বেশি থাকায় পুষ্টিমানের বিচারে তেলটি উৎকৃষ্ট এবং যাঁরা পরিশ্রম কম করেন তাঁদের জন্য উপযুক্ত। এ তেলে ১৩-১৫% অত্যাবশ্যকীয় বহু-অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড লিনোলিক এসিড রয়েছে যা এ তেলটির গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়েছে। তবে এ তেলে অধিক মাত্রায় ইরুসিক এসিড এবং এ্যালাইল আইসোথায়োসায়ানেট (যার জন্য সরিষার তেলের তীব্র ঝাঁঝালো গন্ধ হয়) থাকায় পাশ্চাত্য দেশগুলোতে এ তেল ভোজ্য তেল রূপে গ্রহণযোগ্য হয়নি। এ তেলকে তাদের উপযোগী করার জন্য ‘জেনেটিক্যালী মডিফাই’ করে কম ইরুসিক এসিড সম্পন্ন তেল বীজ উৎপাদন করা হয়েছে যা থেকে প্রাপ্ত তেল ক্যানোলা তেল’ নামে পরিচিত।
সয়াবীন তেলঃ আমদানীকৃত ভোজ্য তেলগুলোর মধ্যে এদেশে সয়াবীন তেলই জনপ্রিয়। অধিক উৎপাদন, সহজলভ্যতা, গ্রহণযোগ্য মূল্য এবং পুষ্টিমানের জন্য সয়াবীন বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় তেল। তবে এ তেলে বহু-অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিডের
পরিমাণ বেশী থাকায় সয়াবীন
তেল দিয়ে
তৈরি খাবারের স্থায়িত্ব কম এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে
এ তেল ব্যবহারের অনুপযোগী।
যেমন উচ্চ তাপমাত্রায় অর্থাৎ যে তাপে আমরা সাধারণত ভাজা-ভুনা করি ও মশলা কষাই, সেই তাপে এ তেলের অক্সিডেশন ঘটে বলে উচ্চ তাপমাত্রায়
রান্নার ক্ষেত্রে এ তেল ব্যবহার করা ঠিক নয়। কারণ অক্সিডেশনের ফলে তেলের গুণগতমান নষ্ট হয়। সয়াবীন তেলে সম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিডের পরিমাণ
প্রায়
১৫%, একক-অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিডের পরিমাণ ২২-২৩%, বহু-অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিডের পরিমাণ
প্রায় ৬৪%। এর মধ্যে লিনোলিক এসিডের পরিমাণ ৪৩- ৫৬%। বেশী মাত্রায় অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি এসিড থাকার কারণে অনেকেই সয়াবীন তেল পছন্দ করেন। আবার সয়াবীন তেলের ‘ফ্লেভার রিভার্সন’ ঘটে অর্থাৎ তেল পরিশোধনের মাধ্যমে গন্ধ শূন্য করার পরও কিছু সময় পর সয়াবীন তেলের বৈশিষ্ট্যমন্ডিত গন্ধটা
ফিরে আসে যা অনেকেই অপছন্দ করেন।
যাঁদের দৈহিক পরিশ্রম কম তাঁদের জন্য এ তেল উপযোগী। তবে এ তেলে রান্না করা খাবার বার বার গরম
করলে
খাদ্যের গুণগত মান, স্বাদ ও গন্ধ কমে যায় এবং ফ্রি-ফ্যাটি এসিড বেড়ে যায়। এ কারণে যে সব পরিবারে
সকালে/দুপুরে রান্না করে রাত্রে
সেই খাবার গরম করে খাওয়া হয় তাদের জন্য সয়াবীন তেল উপযোগী নয়।
পাম তেলঃ বিশ্বব্যপী জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে বর্তমানে সয়াবীন তেলের পরই রয়েছে পাম তেল। তবে পাম তেলের জনপ্রিয়তা যেহারে বাড়ছে তাতে পাম তেল যে অচিরেই জনপ্রিয়তার শীর্ষে যাবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। পাম তেলের জনপ্রিয়তাবৃদ্ধির কারণ হচ্ছে বিভিন্ন খাদ্য প্রস্তুতিতে পাম তেলের বহুবিধ উপযোগীতা।
পাম তেলে সম্পৃক্ত ও অসম্পৃক্ত উপাদান
প্রায় সমান সমান থাকায় এ তেল
খুবই স্থায়ী। পাম তেলে
সম্পৃক্ত ফ্যাটিএসিডের পরিমাণ প্রায় ৫০%, একক-অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিডের পরিমাণ প্রায় ৩৯% ও বহু-অসম্পৃক্ত
ফ্যাটি এসিডেরপরিমাণ ১১% যার প্রায় সবটুকুই অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি এসিড লিনোলিক এসিড।পাম তেলে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক
এন্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় এবং এর সম্পৃক্ত উপাদানের জন্য উচ্চ তাপমাত্রায় এ
তেল স্থায়ী। এ কারণে ভাজা-ভুনা খাদ্য তৈরিতে পাম তেল অত্যন্ত উপযোগী। উচ্চ তাপমাত্রায় স্থায়িত্বের কারণেপাম তেলে রান্না করা খাদ্যদ্রব্য অধিক সময়
পর্যন্ত খাদ্যোপযোগী থাকে। আবার পরিশোধিত পাম তেল গন্ধ শূন্য হওয়াতে পাম তেলে ভাজা খাদ্যের স্বাভাবিক গন্ধ বজায় থাকে।
আমাদের দেশের শহরে বসবাসকারী নিু মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণী, শ্রমিক এবং গ্রামে বসবাসকারী কৃষক পরিবারগুলোর জন্য পাম তেল অত্যন্ত
উপযোগী। উপরোক্ত শ্রেণীর
লোকদের পক্ষে
নিয়মিত দুধ, ঘি, মাখন, মাছ, মাংস খাওয়া সম্ভব নয়। পাম তেলের মধ্যে সম্পৃক্ত ফ্যাটি
এসিডের পরিমাণ বেশী থাকায় উপরোক্ত শ্রেণীর লোকেরা দুধ, ঘি, মাছ, মাংস প্রভৃতি না খাওয়ার জন্য তাদের
শরীরে সম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিডের যে ঘাটতি হয় তা পাম তেলের
মাধ্যমে পূরণ হয়ে যাবে। এছাড়া তুলনামূলকভাবে সরিষার তেল ও
সয়াবিন তেল অপেক্ষা দাম কম হওয়ায় এ শ্রেণীর লোকের জন্য পাম তেল অর্থনৈতিকভাবে
সুবিধাজনক হবে।
আমাদের দেশের ৮০-৮৫ ভাগ জন
গোষ্ঠীর খাদ্যাভ্যাসের সংগে পাম তেল সঙ্গঁতিপূর্ণ। সাধারণভাবে আমাদের দেশেদুপুরে তৈরি
খাবার দুপুরে ও রাত্রে দুই বেলাতেই গ্রহণ করা হয়। পাম তেলে রান্না করা খাবার ৩/৪ বার
গরম করলেও এর গুণাগুণ অক্ষুন্ন থাকে। পাম তেলে প্রাকৃতিকভাবে বিদ্যমান উচ্চমাত্রার ভিটামিন ‘ই’ এবং ‘এ’ এন্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং পাম তেলকে সহজে
নষ্ট হতে দেয় না।
উচ্চবিত্তদের জন্যও পাম তেল উপযোগী। বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক সমীক্ষায় জানা গেছে যে পাম তেলে প্রাকৃতিকভাবে বিদ্যমান উচ্চমাত্রার ভিটামিন ‘ই’-এর কারণে পাম তেল ব্যবহারে ক্ষতিকর এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস পায় এবং উপকারী এইচডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। পাম তেল রক্তের জমাট বাধাঁর প্রবণতা হ্রাস করে হৃদরোগের ঝুঁিক কমায়। এছাড়া পাম তেল ক্যান্সার রোধেও সহায়তা করে। এ দেশের পুষ্টি সমস্যার সমাধানে পাম তেল যথেষ্ট ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।
প্রসঙ্গঁত আরও উল্লেখ্য যে, ২০০৫ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী তেল/চর্বি বিশ্বের রপ্তানী বাণিজ্যের প্রায় ৫৫% ছিল পাম তেলের দখলে যেখানে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সয়াবিন তেলের দখলে ছিল ২২%। উৎপাদনের দিক দিয়েও পাম তেল প্রায় সয়াবিন তেলের সমকক্ষ এবং অচিরেই সর্বোচ্চ উৎপাদিত ভোজ্য তেল হিসেবে পরিগণিত হবে, যা দীর্ঘদিন ধরে সয়াবিন তেলের দখলে রয়েছে। বাংলাদেশেও আমদানী ও ব্যবহারের দিক দিয়ে পাম তেলের অবস্থান শীর্ষে। ২০০৫ এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী ভোজ্য তেল/চর্বি আমদানীর প্রায় ৮০% ও ব্যবহারের প্রায় ৭০% ছিল পাম তেলের দখলে।
সর্বশেষে একটি চমকপ্রদ তথ্য দিয়ে লেখাটি শেষ করতে চাই, তা হলো ‘আমেরিকান হার্ট এসোসিয়েশন’ (AHA)- এর সর্বশেষ তথ্য মোতাবেক মানবদেহের জন্য সবচেয়ে উপকারী ভোজ্য তেল সেটাই যার মধ্যে সম্পৃক্ত, একক- অসম্পৃক্ত ও বহু-অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিডের সমাহার ০.৭ঃ১.৩ঃ১ অনুপাতে আছে। কিন্তু প্রাকৃতিকভাবে কোন ভোজ্য তেলেই ফ্যাটি এসিডগুলোর সমাহার এই অনুপাতে নাই। তবে দুই বা ততোধিক ভোজ্য তেলের মিশ্রণে এই অনুপাত অর্জন করা সম্ভব। আর তাই বর্তমানে বিশ্বব্যাপী মিশ্রিত ভোজ্য তেলের ব্যবহার দ্রুত বেড়ে চলেছে। আর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য তথ্য হল সরিষা এবং পাম তেলের ৫০ঃ৫০ অনুপাতের মিশ্রণে তৈরী ভোজ্য তেলে ফ্যাটি এসিডগুলোর
অনুপাত, AHA কর্তৃক সুপারিশকৃত অনুপাতের সবচেয়ে কাছাকাছি থাকে। এখন আপনিই ঠিক করুন কোন তেলটি আপনার পরিবারের জন্য সবচেয়ে উপযোগী। ( সংগৃহীত)