করোনায় ৮০ শতাংশ ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তার ব্যবসা বন্ধ, আর্থিক প্রণোদনা দাবী
শরমিতা লায়লা প্রমিঃ ২০জুন-২০২০, বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের পাশাপাশি বাংলাদেশও করোনা ভাইরাস মহামারী থেকে রক্ষা পায় নাই, বাংলাদেশে দিন দিন ব্যাপক হারে করোনা ভাইরাস বিস্তার লাভ করছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে সরকারের ঘোষিত সাধারণ ছুটি চলাকালিন সময়ে ৮০ শতাংশ গ্রামীণ ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তা তাদের চলমান ব্যবসা বা উদ্যোগ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছেন। এছাড়া নানা সংকট মোকাবেলা করে বাকি ২০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসা পরিচালনার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। কিন্তু করোনা ভাইরাসের সংক্রামকরোধে সরকার দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহন করেছে, তাই দেশের অধিকাংশ ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তার ব্যবসা বন্ধ করে অন্য উপায়ে রুটি রোজগারে চলে যাচ্ছে, অনেকে অনাহার অদ্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে।

দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী, সেই সংখ্যায় নারীদের কর্মক্ষেত্রে বিচরন প্রায় মোট জনসংখ্যার ১০% থেকে ১৫% শতাংশের বেশি নয়। নারীদের কর্মসংস্থানের লক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারিভাবে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহন করেছেন, সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নারীরা খুদ্র ও মাজারি ধরনের উদ্যোক্তার হিসাবে বিভিন্ন ধরনের কাজে নিজেদের নিয়োজিত করে, তার মধ্যে অন্যতম হস্ত বা কুটির শিল্প, বিউটি পার্লার ব্যবসা, মেয়েদের ও শিশুদের পোশাক প্রস্তুত, যেমন বুটিক, এপ্লিক, কাটওয়ার, কারচুপি, নকশী কাথা, কারুকাজ সম্বলিত পিলু কবারসহ বিভিন্ন ধরের হাতের কাজের শিল্পের সাথে মেয়েরা একজন সফল উদ্যোক্তার হিসাবে দেশ-বিদেশে সুনাম অর্জন করেছেন, এই ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ গ্রামিন বেকার মহিলাদের কাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে, এই ক্ষেত্রে স্বামীদের পাশাপাশি মেয়েরাও পরিবারে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছে, ছেলে মেয়েদের লেখা-পড়াসহ বিভিন্নভাবে পরিবারকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
করোনা ভাইরাস মহামারির কারনে আজ সল্প ও ক্ষুদ্র মহিলা উদ্যোক্তাদের ব্যবসা বন্ধ, আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ, সরকারি সাহায্য ছাড়া তাদের পক্ষে ব্যবসা চালু করা কোন ভাবেই সম্ভব নয়। দেশের প্রায় এক কোটি মহিলা কোন না কোণভাবে এই কাজের সাথে জড়িত আছে, তারাও আজ বেকার, অসহায়, খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছে।
এই বিষয় মুন্সীগঞ্জ বিক্রমপুর নারী সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, একজন নারী উদ্যোক্তা অ্যাড. সোহানা তাহমিনা বলেন মুন্সীগঞ্জ জেলার প্রায় লক্ষাধিক মহিলা বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে এই ধরনের ক্ষুদ্র ও মাজারি শিল্পের সাথে জড়িত আছে, কাজ হারিয়ে তারাও আজ বেকার, চরম আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে, তাদের বাঁচিয়ে রাখতে সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনকে সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে হবে, বাংলাদেশের ইতিহাস ঐতিহ্য রক্ষায় এই সকল ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তা বাঁচিয়ে রাখা অপরিহার্য, এই ক্ষেত্রে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন, আমি মনে করি এই সকল ক্ষুদ্র ও স্বল্প উদ্যোক্তাদের আর্থিক প্রণোদনা আওতায় এনে তাদের জন্য নুন্যতম সুদে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করা এবং আর্থিক অনুদান প্রদান করা, যাতে করে মুখ থুবড়ে পরা এই সকল ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তার আবার দাঁড়াতে পারে, নারীর ক্ষমতায়ন সুনির্দিষ্ট লক্ষে এগিয়ে যায়। সম্পাদক, চেতনায় একাত্তর