বিলপ্তির পথে একাত্তরের রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধারা, সদরে মারা গেল পর পর তিন মুক্তিযোদ্ধা
চেতনায় ডেস্কঃ আমাদের মহান স্বাধীনতার বীর পুরুষ, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, একাত্তরের রনাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা, যারা একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের এই দেশীয় দোসর জামাত-শিবির, রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীকে পরাজিত করে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল, বিশ্ব মানচিত্রে জম্ম নিয়েছিল আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ।

সেই বীর মুক্তিযোদ্ধারা দিন দিন মারা যাচ্ছে, এইভাবে মারা যেতে থাকলে অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা আর কোন মুক্তিযোদ্ধার দেখা পাব না, আমদের দেশ থেকে বিলপ্তি হয়ে যাবে একাত্তরের রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধারা। কালের গর্বে তলিয়ে যাবে মুক্তিযুদ্ধের সকল স্মৃতি, মুক্তিযোদ্ধা কি সেটাও কেহ জানতে চাবে না।
আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার ভালোবাসায় আজ জীবনের শেষ প্রান্তে এসে মুক্তিযোদ্ধারা কিছু অর্থ ভাতা – বোনাস হিসাবে পেয়ে কোন রকমভাবে বেঁচে আছে, কিন্তু দুঃখ জনক হলেও সত্যি সরকারি,বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, কর্মকর্তারা এমনটি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ সম্মানটুকু দেন না, কোন কাজে গেলে দীর্ঘ সময় বৃদ্ধ বয়সে মুক্তিযোদ্ধাদের দাড়িয়ে থেকে অপেক্ষা করতে হয়। কাগজে কলমে মুক্তিযোদ্ধাদের যে সম্মান দেওয়ার কথা বলা হয়, বাস্তবতা তার ঠিক বিপরীত চিত্র। মুক্তিযোদ্ধার নাম শুনলে, দেখলে যেন অনেকের গায়ে কাটা লাগে। এটা ঠিক মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে এখনও যারা বেঁচে আছে তাদের অধিকাংশ দরিদ্র, নিম্ম মধ্যবিত্ত শ্রেণীর, তাই তাদের জামা কাপড়, চলাচল তেমন পরিপাটি না থাকায় বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের হেয় প্রতিপন্ন হতে হয়।
এই ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রানালয় থেকে প্রায় পাঁচ বছর যাবত পরিচয় পত্র দেওয়ার কথা বলা হলেও, বার বার তারিখ ঘোষণা করা হলেও আজ পর্যন্ত তাহা কার্যকর করা হয়নি, মন্ত্রানালয় থেকে বহু আশ্বাস দেওয়া হয় এই পরিচয় পত্র দ্বারা মুক্তিযোদ্ধারা বিভিন্ন সরকারি সুযোগ সুবিধাভোগ করবে। মুক্তিযোদ্ধাদের বিনা সুদে বাড়ি করার ব্যাংক ঋণ প্রদান, সরকারিভাবে বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া সহ কতো আশ্বাস দেওয়া হয়, পরিশেষে মন্ত্রী মহদয় যথার্থই বলেছেন মুক্তিযদ্ধাদের কবর পাকা করে দেওয়া হবে, একজন মুক্তিযোদ্ধার এই বিষয় বলেন মন্ত্রি মহোদয় দয়া করে আমাদের কবরের পাশে আমাদের পরিচয় পত্র আর ফ্লাট বাড়ির একটা ছবি জুলিয়ে রাখতে ভুলবেন না, জীবনে না পেলেও মরনের পর ফ্লাট বাড়ি আর পরিচয় পত্রের ছবিটা পেলাম, দয়াকরে আর আশ্বাস দিয়ে একাত্তরের রনাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা, যাদের ৮০% জন দরিদ্র- মধ্যবিত্ত শ্রেণীর তাদের আশাহত করবেন না।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নিকট বিনিত অনুরোধ আপনি মুক্তিযোদ্ধাদের বেঁচে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন, শেষ বয়সে মুক্তিযোদ্ধারা যাতে সুচিকিৎসা নিয়ে সম্মানের সাথে শান্তিতে মরতে পারে সেই জন্য নুন্যতম আপনি সকল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য একটি শান্তি নিবাস মুক্তিযোদ্ধা পল্লি নির্মাণ করে দেন। তাতেই আমরা আপনার নিকট চির কৃতজ্ঞতা থাকবো।
আমরা আর কতদিন বাঁচব প্রতিদিন কোন না কোন স্থানে মুক্তিযোদ্ধা মারা যাচ্ছে, এইতো আমদের সদর উপজেলার পাশা পাশি দুটি ইউনিয়নে রামপাল আর মিরকাদিম পৌরসভায় পর পর তিনজন মুক্তিযোদ্ধা বীর মুক্তিযোদ্ধা আদিব উদ্দিন চৌধুরী হাবলু, বীর মুক্তিযোদ্ধা একাব্বর হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা তোতা মিয়া মারা গেলেন, তাদের চোখে মুখেও অনেক স্বপ্ন ছিল,তাদের সেই স্বপ্ন অপূরণীয়ই থেকে গেল।
সম্পাদক, চেতনায় একাত্তর