শেখ আলী আকবরঃ সস্তায় ইলিশ মাছ খওয়ার লোভ সামলাতে না পারাই মুলতঃ মা- ইলিশ নিধন যজ্ঞের কারন। গত ৯ই অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ মাছ ধরা ও বিক্রয় করা দেশব্যাপী সরকারীভাবে নিষিদ্ধ করা হলেও এক শ্রেণীর লোভী মানুষের কারনে ইলিশ মাছ নিধন যজ্ঞ বন্ধ করা কিছুতেই সম্ভব হচ্ছে না। এক দিকে জেলেরা বাড়তি আয়ের লোভে ইলিশ মাছ নিধন থেকে বিরত হচ্ছে না। ইলিশ মাছ ধরার জন্য আধুনিক জাল ও ইঞ্জিন চালিত নৌকা নিয়ে ব্যাপক হারে মা ইলিশ নিধন করে চলছে। আর এক শ্রেণীর ক্রেতা সস্তায় ইলিশ মাছ খাওয়ার লোভ সম্ভ্রম করতে না পেরে তারা শতে শতে এসে ভিড় জমাচ্ছে পদ্মা ও মেঘনা নদির দুর্গম চরাঞ্চলে। বিশেষ করে এদের মধ্যে সচ্ছল মানুষের সংখ্যাই বেশী। তারা নিজেরা অথবা লোক পাঠিয়ে এই সব এলাকা থেকে ইলিশ মাছ কিনে এনে ফ্রিজ ভর্তি করে রাখছে যাতে তারা দীর্ঘদিন ইলিশ মাছের সাধ গ্রহন করতে পারে। আর এই সব ক্রেতাদের এত অধিক ভিড় জমানোর কারনেই জেলেরা এই সুযোগে দু টাকা কামাই করার লোভ সামলাতে না পেরেই সরকারী নিষেধ অমান্য করে এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিরোধ ও জেল জরিমানা উপেক্ষা করে ইলিশ মাছ নিধন করেই চলছে। ক্রেতাদের মধ্যে শুধু সাধারন জনগণই নয় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর কিছু অসাধু সদস্য এমনকি সেনা বাহিনীর লোকজনও ইলিশ মাছ কিনতে নদীর পাড়ে ভির জমাচ্ছে।
গত ১৮ই অক্টোবর দেড় শত ইলিশ নিয়ে ঢাকা যাওয়ার পথে সেনা বাহিনীর দুই সদস্যকেও আটক করা হয়। লৌহজং উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ ইদ্রিস তালুকদার সাংবাদিকদের জানান, শুক্রবার ভোররাতে শিমুলিয়া ঘাট থেকে একটি প্রাইভেট কার যোগে দেড়’শ ইলিশ মাছ নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার পথে জনতা দুই সেনা সদস্যকে আটক করে মাওয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়িতে সোপর্দ করে। ঐ দুই সেনা সদস্য হচ্ছে সেনা বাহিনীর এভো ক ফিল্ড ওয়ার্কশপ কোম্পানির শরীয়তপুর ক্যাম্পের লেফটেন্যান্ট কর্পোরাল মোঃ ইউসুফ আলি (৩৩) ও কর্পোরাল মোঃ অলিয়ার রহমান (৩২) মাওয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ওসি মোঃ আমিরুল ইসলাম জানিয়েছেন ঐ দুই সেনা সদস্যকে নিষিদ্ধ ইলিশ পরিবহন ও সংরক্ষণের দায়ে আটক করা হয়েছে, তবে তাদের বিরুদ্ধে মামলা না দিয়ে সেনা বাহিনির সংশ্লিষ্ট কোম্পানির কাছে হস্তান্তর করা হবে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য। গতকাল ঐ কোম্পানির ক্যাপ্টেন মঈন এসে তাদের নৌ পুলিশের কাছ থেকে বুঝে নেন। তাছাড়া আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্যও ইলিশ মাছ কিনার লোভ সম্বরণ করতে পারছেন না। তারপরও কিছু প্রভাবশালীকে জেলেরা ইলিশ মাছ দিয়ে তাদের হাত করে জেলেরা ইলিশ মাছ নিধন চালিয়ে যাচ্ছে। সব কিছু বিবেচনায় সরকারের ইলিশ মাছ নিধন কর্মসূচী সফল হচ্ছে না, নদীর বিশালতা আর জেলেদের সংখ্যার তুলনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনির সদস্য সংখ্যা খুবই কম থাকায় তারা ইলিশ মাছ নিধন নিয়ন্ত্রন করতে পারছেন। এই বিষয় নিষিদ্ধ সময়ের জন্য মা ইলিশ নিধন বন্ধে সরকারকে নতুন করে ভাবতে হবে।